বাংলার আম
শিরোনাম:
বাংলার আম – সুমিষ্ট স্বাদে বিশ্বজয়
লেখক: সঞ্জয় পাল
প্রকাশিত: তারিখ -২৩ মে ২০২৫
গ্রীষ্ম এলেই পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি বাজারে ছড়িয়ে পড়ে এক মিষ্টি ঘ্রাণ – আমের ঘ্রাণ। শুধু ঘ্রাণেই নয়, স্বাদ, গুণাগুণ এবং বৈচিত্র্যে বাংলার আম আজ বিশ্বজয় করে চলেছে।
বাংলার মাটিতে আমের রাজত্ব
পশ্চিমবঙ্গের প্রায় প্রতিটি জেলায় আম চাষ হয়, তবে মালদহ, মুর্শিদাবাদ, নদীয়া, উত্তর ২৪ পরগনা – এই জেলাগুলোর ভূমিকা অনন্য। এখানে চাষ হয় নানা স্বাদের, ঘ্রাণের এবং রঙের আম:
হিমসাগর – আঁশহীন, ঘ্রাণে ভরপুর এবং রসে টইটম্বুর। রাজকীয় স্বাদের এই আম মূলত মুর্শিদাবাদ ও নদীয়ার গর্ব।
ল্যাংড়া – মালদহের প্রধান আম। হালকা টক-মিষ্টি স্বাদের জন্য জনপ্রিয়।
ফজলি – আকারে বড়, মাংসল ও রসাল। প্রায় ১ কেজি পর্যন্ত হতে পারে।
আম্রপালি – আধুনিক জাতের এই ছোট আকৃতির আম শহরাঞ্চলে বেশ জনপ্রিয়।
এছাড়াও রয়েছে: গোলাপখাস, কিষানভোগ, সুবর্ণরেখা, মল্লিকা – স্বাদে স্বতন্ত্র।
দাম কত?
আমের দাম মৌসুম ও গুণমান অনুযায়ী ওঠানামা করে।
হিমসাগর ও ল্যাংড়া: প্রতি কেজি ৮০–১২০ টাকা (উচ্চমানের ক্ষেত্রে ১৫০ পর্যন্ত)।
ফজলি: প্রতি কেজি ৬০–১০০ টাকা।
আম্রপালি: প্রতি কেজি ৫০–৯০ টাকা।
স্বাদে নয়, স্বাস্থ্যেও উপকারী
আম শুধুমাত্র রসনা তৃপ্তির ফল নয় – এটি ভরপুর পুষ্টিগুণেও সমৃদ্ধ।
এতে রয়েছে ভিটামিন A, C, E – যা চোখ, ত্বক ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় এটি ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক।
ডায়েটারি ফাইবার হজমশক্তি বাড়ায় ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
বিশ্ববাজারে বাংলার আম
বাংলার আম এখন শুধুই স্থানীয় নয় – এটি আন্তর্জাতিক বাজারেও নাম কুড়োচ্ছে। প্রতিবছর হাজার হাজার টন আম রপ্তানি হয় নানা দেশে। প্রধান রপ্তানিগন্তব্য:
যুক্তরাজ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, কাতার – যেখানে হিমসাগর ও ল্যাংড়া চাহিদার শীর্ষে।
কানাডা, আমেরিকা, সিঙ্গাপুর – এখানে আম্রপালি জাতের আমের কদর বেশি।
সম্প্রতি জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া থেকেও এসেছে আগ্রহ।
শেষ কথা
বাংলার এই ‘সোনালি রস’ শুধু কৃষকের নয়, বাংলা সংস্কৃতিরও পরিচয়। আজ হিমসাগরের গন্ধ লন্ডনের বাজারে পৌঁছলে প্রতিটি বাঙালির হৃদয় আনন্দে ভরে ওঠে। বাংলার আম যেন বিশ্বকে জানান দেয় – স্বাদে, গন্ধে ও গৌরবে আমরা অনন্য।
*নয়ন তারা*
Comments
Post a Comment