ছাত্র জীবন ও মোবাইল
---
ভারতবর্ষের ছাত্র জীবন ও মোবাইল: আশীর্বাদ না অভিশাপ?
ভারতবর্ষে শিক্ষাব্যবস্থা এক বিশাল রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, আর এই পরিবর্তনের কেন্দ্রে রয়েছে মোবাইল ফোন। প্রযুক্তির দ্রুত প্রসার এবং স্মার্টফোনের সহজলভ্যতা ছাত্রজীবনে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। কিন্তু এই পরিবর্তন কি কেবল আশীর্বাদ, নাকি এর সাথে লুকিয়ে রয়েছে কিছু অভিশাপও?
মোবাইলের আশীর্বাদ
১. জ্ঞানার্জনের সহজ পথ: গুগল, ইউটিউব, অনলাইন কোর্স – এসব আজ হাতের মুঠোয়। যেকোনো বিষয়ে তথ্য পাওয়া এখন কয়েক সেকেন্ডের ব্যাপার। মোবাইল ফোন শিক্ষাকে করেছে সহজ, গতিশীল ও ইন্টার্যাকটিভ।
২. অনলাইন ক্লাস ও শিক্ষা অ্যাপ: কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে অনলাইন শিক্ষার বিস্তার ঘটেছে ব্যাপকভাবে। মোবাইলের মাধ্যমে Zoom, Google Meet ইত্যাদি প্ল্যাটফর্মে ক্লাস করা আজ সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
৩. যোগাযোগের মাধ্যম: শিক্ষক, সহপাঠী ও অভিভাবকদের সাথে সহজ যোগাযোগে মোবাইল হয়েছে অপরিহার্য। এতে দলগত প্রকল্প, পড়াশোনার আলোচনা আরও কার্যকর হয়েছে।
মোবাইলের অভিশাপ
১. বিনোদনে আসক্তি: সোশ্যাল মিডিয়া, গেমস, ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ছাত্রদের মনোযোগ বিচ্যুত করছে। পড়াশোনার বদলে সময় যাচ্ছে স্ক্রিনে চোখ রেখে।
২. শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা: অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারে দৃষ্টিশক্তির ক্ষয়, ঘুমের সমস্যা, মানসিক চাপ – এসব দেখা যাচ্ছে ছাত্রদের মধ্যে।
৩. প্রতারণা ও নকলের প্রবণতা: পরীক্ষার সময় গুগল করে উত্তর বের করা কিংবা চ্যাটজিপিটি’র মতো এআই টুল ব্যবহার করে চিটিংয়ের প্রবণতা বাড়ছে।
সমাধানের পথ
অভিভাবক ও শিক্ষকদের উচিত মোবাইল ব্যবহারে সঠিক দিকনির্দেশনা দেওয়া।
নির্দিষ্ট সময়ে মোবাইল ব্যবহারের অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ডিজিটাল শিক্ষার পাশাপাশি ডিজিটাল সচেতনতা শিক্ষাও দিক।
উপসংহার
মোবাইল ফোন নিজে কোনো অভিশাপ নয়, বরং এর ব্যবহারের ওপর নির্ভর করে এটি আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ হয়ে দাঁড়াবে। ভারতবর্ষের ছাত্রদের উচিত এই প্রযুক্তিকে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে নিজের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা।
--
*নয়ন তারা*
Comments
Post a Comment