ধারাবাহিক ছায়া শহর পর্ব 2



ছায়া শহর – পর্ব ২: ছায়ার মুখোমুখি


অসীম ধীরে ধীরে এগিয়ে গেল পুরনো বাড়িটার দিকে। দরজাটা আধখোলা, যেন কেউ তাকে অপেক্ষা করে রেখেছে। আশেপাশে পাতা খসখস করছে, বাতাসে মিশে আছে একটা পুরনো, ঘোলাটে গন্ধ।


বাড়ির ভিতরে ঢুকেই তার মনে হল—এই বাড়িতে সময় থেমে আছে। দেয়ালে ঝুলে আছে ছেঁড়া পর্দা, মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পুরনো খবরের কাগজ আর এক কোণায় পড়ে আছে একটি ভাঙা রেডিও।


হঠাৎই রেডিওটা নিজের থেকে চলতে শুরু করল।


"এই চর ভৈরবপুরে আসার আগে দু'বার ভাবুন। কিছু ছায়া ফিরে আসে না..."


অসীম রেডিওটা হাতে নিতে না নিতেই সেটা আবার নিঃশব্দ হয়ে গেল। সে গলা শুকিয়ে আসা গলায় ডাকল, “কেউ আছেন?”


উত্তর এল না। কিন্তু পেছন থেকে স্পষ্ট শব্দ—চোখের পাতা একবারের জন্যও বন্ধ করো না।


সে ঘুরে তাকাতেই কাউকে দেখতে পেল না, কিন্তু শীতল একটা ছায়া যেন পেছনে দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎ জানালার পাশে চোখে পড়ল এক ঝলক কিছু। একটা মেয়ের মুখ, মুখটা অস্বাভাবিক সাদা আর চোখ দুটো যেন অন্ধকারে জ্বলছে।


অসীম এগিয়ে গেল জানালার দিকে, কিন্তু পৌঁছানোর আগেই মেয়েটা মিলিয়ে গেল বাতাসে।


এমন সময় দরজার কাছে দাঁড়িয়ে থাকা এক বৃদ্ধা ধীরে ধীরে বলল, “তুমি যদি সুবোধের খোঁজে এসেছো, তবে দেরি করেছো। কিছু ছায়া মানুষ নয়, আর যাদের নিয়ে যায়—তারা ফিরেও আসে না।”


অসীম প্রশ্ন করল, “আপনি সুবোধকে চিনতেন?”


বৃদ্ধা মাথা নিচু করে বলল, “সে এখানে এসেছিল সত্য জানতে, কিন্তু ছায়ারা সত্য ভালোবাসে না।”



---


চলবে…


পরবর্তী পর্বে: অসীম পায় একটি পুরনো ডায়েরি—রাফির শেষ লেখা। তার ভিতরে লুকিয়ে আছে ছায়া শহরের ভয়ঙ্কর গোপন সত্য।



---


*নয়ন তারা*

Comments

Popular posts from this blog

প্রাক্তন স্যারের শ্রেণিকক্ষ

ছায়া থেকে আলো

ডি এ পাওয়ার অপেক্ষা